সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৮ পূর্বাহ্ন
নাজিরপুর প্রতিনিধি॥ পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আ.লীগের সভাপতি একেএমএ আউয়ালের নাজিরপুরে খাস জমিতে থাকা দ্বিতল ভবন দখল করে নিয়েছে উপজেলা ভুমি আফিস। গত ১১ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার ওই ভবনে ‘উপজেলা ভুমি অফিসের রেকর্ড রুম’ নামে একটি সাইন বোর্ড সাটানো হয়েছে। ওই দিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়ন ভুমি অফিসের তহশিলদার শ.ম শাজাহান কবিরের নেতৃত্বে ৬/৭ জন কর্মচারীকে ওই সাইবোর্ড সাটাতে দেখা যায়।
এ সময় ওই ভবনের নীচতলার একটি কক্ষে ভুমি অফিসের বিভিন্ন কাগজ রাখতেও দেখা যায়। উপজেলা ভুমি অফিস সূত্র জানান, পিরোজপুর-১ (নাজিরপুর, পিরোজপুর সদর ও নেছারাবাদ) আসনের সাবেক এমপি একে এম এ আউয়াল নাজিরপুর উপজেলা সদর বাজারের পেরিপেরি ম্যাপভুক্ত সরকারী খাস জমিতে ফারুক হোসেন, মো. কিছলু, সালাম শেখ, মো. আজমল হোসেন, মো. জোনায়েদ, মো. রফিকুল ইসলাম এ ৬ নামে উপজেলা ভুমি অফিসের মাধ্যমে একসনা ডিসিআর নিয়ে সেখানে অবৈধভাবে একটি দ্বিতলা পাকা ভবন করেন। পরে গত ২০১৭ সালে সাবেক এমপি আউয়ালের স্ত্রী লায়লা পারভীনের নামের মালিকাধীন দেখিয়ে পল্লী বিদ্যুতের কাছে ভাড়া দেয়া হয়।
যা বর্তমানে পিরোজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নাজিরপুর জোনাল অফিস হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পল্লী বিদ্যুতের নাজিরপুর জোনা অফিসের এজিএম সুমন সাহা জানান, এমপি আউয়ালের স্ত্রী মিসেস লায়লা পারভীনের কাছ থেকে ১৭ হাজার ২৫০টাকা মাসিক ভাড়া হিসাবে ওই ভবনটি ভাড়া নেয়া হয়েছে। ভাড়া দেয়া চুক্তি সূত্রে জানা গেছে, ওই ভবনটি জেলা আ.লীগের উপদেষ্টা সদস্য মরহুম আলহাজ শেখ আবুল বাশারের ভবনের দাগ-খতিয়ান ও অবকাঠামো দেখিয়ে চুক্তি করা হয়েছে। উপজেলা ভুমি অফিস সূত্র জানান, গত ২০০৮ সালে আউয়াল এমপি হয়ে ওই ৬ নামে ৬টি ভিটি নিয়ে তা বাংলা ১৪২১ সাল পর্যন্ত লিজ নেন।
কিন্তু পরে তা নবায়নের জন্য ওই ৬ নামের নাম-ঠিকানায় নতুন নবায়নের নোটিশ দেয়া হলে তাদের কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায় নি। এমনকি কেউ নবায়নের জন্য আসেন নি। ভুমি অফিস সূত্র আরো জানান, ওই ৬ নামের দেয়া ঠিকানায় স্থানীয় ভোটার তালিকায় তাদের নামও পাওয়া যায় নি। এ ঘটনায় গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক এক আদেশে ওই সব ভিটির একসনা বন্দোবস্ত বাতিল করেন। প্রায় একই প্রক্রিয়ায় জেলার নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠী) উপজেলার ডাকবাংলোর কাছে একটি সরকারি খাস জমি অবৈধভাবে দখল করে সেখানে তিন তলার একটি ভবন নির্মান করেছেন। যা পরে আউয়াল ফাউন্ডেশন নামে নামকরন করা হয়। এমপির ক্ষমতা প্রয়োগ করে তিনি এ জালিয়াতির আশ্রয় নেন।
ওই অপরাধে একেএমএ আউয়ালের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৪২০/৪০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় আরো একটি মামলা দায়ের করেছেন দুদক। উল্লেখ্য, দুদকের ডেপুটি সহকারী পরিচালক মো. আলী আকর বাদী হয়ে এ জমি সহ পিরোজপুরের একটি সরকারী জমিদখল ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ৩০ ডিসেম্বর দুদকের সমন্বিত জেলা বরিশালে এমপি আউয়ালের নামে ৩টি ও তার স্ত্রী লায়লা পারভীন নামে ১টি সহ মোট ৪টি মামলা দায়ের হয়েছে।
উল্লেখ্য, এমপি এ কে এমএ আউয়াল ২০০৮ ও ২০১৪ সালে পর পর ২বার পিরোজপুর-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন । এ সময়ে তিনি এসব দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন।
Leave a Reply